ভোলা প্রতিবেদক ॥ স্বামী স্ত্রী দু’জনই মানসিক প্রতিবন্ধি। আম্পানের ঝড়ের রাঁতে নিকটস্থ সাইক্লোন সেল্টারে জীবন বাচাঁতে আশ্রয় নেয়। এই আশ্রয় কেন্দ্রেই যে তাদের সর্বনাশ অপেক্ষা করছে কে জানতো। ঘুমন্ত স্বামির পাশে থেকে প্রতিবন্ধি ঘুমন্ত স্ত্রীর মুখে গামছা পেছিয়ে ধর্ষণ করে স্থানীয় যুবক। ঘটনাটি ভোলার প্রত্যন্ত চর চটকিমারায়। চরটি সদর উপজেলার ভেদুরিয়া ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের তেতুলিয়া নদীর ওপার।
স্থানিয়রা জানান, দু’বছর হলো মানসিক প্রতিবন্ধি আলমগীরের বিয়ে হয় পাশের গ্রামের মানসিক প্রতিবন্ধি যুবতীর সাথে। কোন সন্তান সন্তুতি নাই। ইদানিং আলমগীরের বউয়ের শারিরীক অবস্থা অস্বাভাবিক দেখা দিলে প্রতিবেশীরা আলমগীর ও তার বউকে চাপ দিলে ঘটনার কারন জানা যায়। প্রতিবেশী নেজু হাওলাদারের ছেলে জাকির মাঝি (২৮) আম্পানের ঝড়ের রাঁতে মুখে গামছা পেছিয়ে ধর্ষণ করে আলমগীরের প্রতিবন্ধি স্ত্রীকে। সেই থেকে প্রায়ই আলমগীরের বসত ঘরে গিয়ে বউকে ধর্ষণ করে জাকির। এখন বউটা গর্ভবতী। গত ১৪ জুলাই রোজ মঙ্গলবার বিকেল ৩ টার সময় ধর্ষকের বাড়ীর উঠানে বসে ইউনিয়ন চকিদার ছগীর আহাম্মেদ (৫৫) (গ্রাম পুলিশ) ধর্ষক জাকিরের আপন ভাই কাশেম মাঝি (৫৫), রুহুল আমিন মাঝি (৫০), ফরিদ মাঝি (৪০), আনোয়ার ডাক্তার (৪৫), জসিম বেয়ারি (৪০), ইউসুফ ঘটক (৫০) ধর্ষক জাকিরের কোন শাস্তি বা জরিমানা ছাড়াই বৈঠক শেষ করে রায় দেন এই বলে যে, জাকির আর আলমগীরের ঘরে আসতে পারবে না। প্রতিবন্ধি দম্পত্তিকে ঘটনা এখানেই ধামা চাপা দিতে হবে বলে হুমকি দেন সালিশদারগণ।
এদিকে ঘটনা জানাজানি হওয়ায় আলমগীর ও তার বউকে জাকির ও তার ভাইয়েরা এলাকা ছাড়া করার পায়তারা করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কি হবে গর্ভপতি প্রতিবন্ধি ও তার অনাগত সন্তানের ভবিষ্যৎ। গ্রামবাসী এই অবস্থায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। প্রতিবন্ধি ধর্ষিতার বলছেন- ঘর দিয়া পানি পড়ে, এর লাইগা দালান ঘরে গেছি থাওনের লাইগা। আমাগো পাশের বাড়ীর জাকির মাঝি (২৮)। তুফানের রাইতে আমার শরীরের উপর উইঠা অনেক কষ্ট দিছে। তহন থেইকা প্রতিরাইতেই আমাগো ঘরে আইসা আমার উপর পারাপারি করে। আর কয়, কেওরে কইলে আমাগোরে মাইরা ফালাইবো। এহন আমার খালি বমি আয়, কিছু খাইতাম পারিনা, আমার পেডেও কষ্ট, খালি মাইনষে চেতায়।
ধর্ষিতার স্বামি প্রতিবন্ধি আলমগীর বলেন, জাকিরায় তুফানের রাইত থেইকা ঘন ঘন আমার ঘরে আইসা আমাগো লগে হুইয়া থাহে। কেওরে কইলে মাইরা লাইবো কইছে। এহন আমার বউর পেড বড় হইছে কা, মাইনসে আমারে খালি চেতায়। ছকির চহিদার (গ্রাম পুলিশ), কাশেম মাঝি, আনোয়ার ডাক্তার, জসিম বেয়ারি, ইউছুপ ঘটক বিচার কইরা কইছে জাকিরারে আর আমাগো ঘরে আইতেনা। এহন আর আহেনা। কাশেম মাঝি আমাগোরে এলাকার তনে খেদায়া দিবো। আমি এহন কই যামু। প্রধান সালিশদার ছগীর আহাম্মেদ চকিদার (গ্রাম পুলিশ) ঘটনা অস্বীকার করে বলেন, আমি এই সমন্ধে কিছু জানিনা। তবে ঘটনাটি আমাকে জানার জন্য ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিরাজ গোলদার পাঠায়। আমি ঘটনাস্থলে ছিলাম তবে কোন শালিশ করিনাই। ৭ নং ওয়ার্ডের মেম্বার সিরাজ গোলদার ঘটনাটি সম্পুর্ণ অস্বীকার করে বলেন, আমি এই সমন্ধে কিছু জানিনা।
স্থানিয় ইউপি চেয়ারম্যান তাজুল ইসলাম মাষ্টার এই প্রতিবেদককে বলেন, এই প্রথম আপনার মাধ্যমে জানতে পারলাম। ঘটনার বিবরনে বুঝা যায় এটা আমার ইউনিয়েনর নিকৃষ্টতম ঘটনা। এই ধরনের অপরাধের কঠোর শাস্তি হওয়া প্রয়োজন। আমি ঘটনাটি আমলে নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহন করছি।
Leave a Reply